সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

মরিয়ম (আ) কি নবী বা রাসূল ছিলেন?

এক

মরিয়ম (আ)-এর নিকট আল্লাহর ওহী, তাঁর বাণী ও তাঁর কিতাব এসেছিল। তিনি ঈসা নামক এক সন্তান জন্ম দেয়ার মাধ্যমে তাঁর দায়িত্ব পালন করেন।
[সূত্র – আল কোর’আন, ৬৬: ১২]

ঈসা (আ)-এর নিকটও আল্লাহর ওহী, তাঁর বাণী ও তাঁর কিতাব এসেছিল। তিনি মানুষকে উপদেশ দেয়ার মাধ্যমে তাঁর দায়িত্ব পালন করেন।


মরিয়ম (আ) প্রচলিত ধারণার বাইরে গিয়ে আল্লাহর আদেশ পালন করার কারণে সাধারণ মানুষের আক্রমণের স্বীকার হন। ঈসা (আ)-ও প্রচলিত ধারণার বাইরে গিয়ে আল্লাহর আদেশ পালন করার কারণে সাধারণ মানুষের আক্রমণের স্বীকার হন।

যেমন মা, তেমন সন্তান।

দুই

ইয়াহিয়া (আ)-এর মত মরিয়ম (আ)-এর নাম আল্লাহ তায়ালা নিজেই রেখেছেন [সূত্র ৩: ৩৬; ১৯: ৭],




আদম (আ)-এর মত মরিয়ম (আ)-এর নিকট আল্লাহ তায়ালা তাঁর রূহ ফুঁকে দিয়েছেন [সূত্র ৬৬: ১২; ৩৮: ৭২],

নূহ (আ) ও ইব্রাহীম (আ)-এর মত মরিয়ম আ কে আল্লাহ মনোনীত করেছেন [সূত্র ৩: ৪২; ৩: ৩৩],

ইসমাইল (আ) এর মত মরিয়ম (আ) ফেরেশতার সাথে কথা বলেছেন [সূত্র ৩: ৪৭; ৪: ১৬৩],

মূসা (আ) ও তাঁর মায়ের মত মরিয়ম (আ)-এর নিকট আল্লাহ তায়ালা তাঁর ওহী পাঠিয়েছেন [সূত্র ৩: ৪৫; ৫২: ৪৩; ৫: ৭৫],

ইউসুফ (আ)-এর মত মরিয়ম (আ) ছিলেন সৎ চরিত্রের অধিকারী [সূত্র ৬৬: ১২; ৫: ৭৫],

ইউনুছ (আ)-এর মত মরিয়ম (আ)-এর নিকট আল্লাহ তায়ালা ফেরেশতা পাঠিয়েছেন [সূত্র ৩: ৪২],

সোলাইমান (আ)-এর মত মরিয়ম আ কে আল্লাহ মুজিযা দান করেছেন [সূত্র ৩: ৩৭; ২৭: ১৮],

ঈসা (আ)-এর মত মরিয়ম (আ) ছিলেন আল্লাহর নিদর্শন [সূত্র ২৩: ৫০],

মুহাম্মদ (স)-এর মত মরিয়ম (আ) এর নিকট আল্লাহ তায়ালা সরাসরি সালাতের আদেশ পাঠিয়েছে [সূত্র -৩: ৪৩; ২: ৪৩],

অন্যান্য নবীদের মত মরিয়ম (আ) আল্লাহ তায়ালার কিতাবসমূহকে সত্যায়ন করেছেন, [সূত্র ৬৬: ১২],

অন্যান্য নবীদের মত মরিয়ম (আ) তাঁর আত্মীয়-স্বজনকে ছেড়ে গিয়ে হিজরত করেছিলেন [সূত্র ১৯: ১৬],

অন্যান্য নবীদের মত মরিয়ম (আ) সাধারণ মানুষের আক্রমণের স্বীকার হয়েছিলেন [সূত্র ১৯: ২৭]
_____________

ইসমাইল (আ)-এর মত মরিয়ম (আ)-কে কিতাব দেয়া হয়েছিলো কিনা, তা কোর'আনে নেই।
ইসহাক (আ)-এর মত মরিয়ম (আ)-মানুষকে দাওয়াত দিয়েছেন কিনা, তা কোর'আনে নেই।

তাই, মরিয়ম (আ)- ইসমাইল ও ইসহাক (আ)-এর মতই।
_____________

যুলকিফল (আ)-কে কোর'আনে নবী বা রাসূল কিছুই বলা হয়নি। যদি যুলকিফল (আ) নবী হিসাবে গণ্য হতে পারেন, তাহলে মরিয়ম (আ)-এর নবী হওয়ার সম্ভাবনা তাঁর চেয়েও বেশি। [সূত্র ৩৮: ৪৮]

দুই


 

দুই।

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আল্লামা জালাল উদ্দিন রূমির বাণী ও কবিতা

ইউরোপ ও অ্যামেরিকা সহ সারাবিশ্বের অমুসলিমরা যে মানুষটির লেখা সবচেয়ে বেশি পড়েন, তিনি মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমি। তাঁর ৫ টি বই ও একটি উপদেশ বাণী রয়েছে। ১। মসনবী, (৬ খণ্ড, ২৬০০০ কবিতার লাইন) ২। দিওয়ানে কবির, (৪০০০০ কবিতার লাইন) ৩। ফিহি মা ফিহি, (বিভিন্ন সভা ও মসলিসে দেয়া বক্তব্য) ৪। মাজালিশ-ই শব, (সাতটি বড় বক্তৃতা) ৫। মাকতুবাত, (১৪৭ টি চিঠি) আর একটি উপদেশ রয়েছে। উপদেশটি হলো – "অল্প খাও, স্বল্প ঘুমাও, কম কথা বল। গুনাহ থেকে দূরে থাক, সবসময় কাজ কর। সুখের অনুসন্ধানী মানুষদের থেকে দূরে থাক, এসব মানুষ তোমাকে যন্ত্রণা দিয়ে যাবে। সৎ, ভালো ও সুভাষী মানুষের সাথে থাক। ভালো মানুষ তারা, যাদের দ্বারা সাধারণ মানুষ উপকৃত হয়। আর, ভালো কথা হলো তাই, যা সংক্ষিপ্ত ও গুরুত্বপূর্ণ। সকল প্রশংসা এক মাত্র আল্লাহর।" [১৭ ডিসেম্বর রূমির 'শবে আরুস'। শবে আরুস অর্থ দ্বিতীয় জন্মের রাত বা মৃত্যুর রাত]

সুফীদের জাহের ও বাতেনের সম্পর্ক

সুফিজমের খুবই গুরুত্বপূর্ণ দুটি শব্দ হলো জাহের ও বাতেন। জাহের মানে প্রকাশ্য, আর বাতেন মানে গোপন। সুফিদের মতে, প্রতিটি জিনিসের একটি অংশ থাকে প্রকাশ্য, এবং একটি অংশ থাকে অপ্রকাশ্য বা গোপন। যেমন, একটি গাছে প্রকাশ্য অংশ হলো গাছের কাণ্ড, পাতা, ফুল ও ফল; আর গাছের অপ্রকাশ্য অংশ হলো শিকড়। সূফীদের কাজ বাতেন বা গাছের শিকড় নিয়ে কাজ করা, আর ফকিরদের কাজ গাছের পাতা-ফুল-ফল ইত্যাদি নিয়ে কাজ করা। গাছের মতো মানুষের প্রতিটি কাজেরও দুটি অংশ রয়েছে। জাহের ও বাতেন। যেমন, কেউ নামাজ পড়ার সময় রুকু-সিজদা করাটা হলো জাহেরি কাজ; আর নামাজে খুশু-খুজু বা মনোযোগ ধরে রাখাটা হলো বাতেনি কাজ। নামাজে রুকু সেজদা ঠিক হয়েছে কি হয়নি, তা শিক্ষা দেন ফকিহগণ; আর নামাজে কিভাবে মনোযোগ ধরে রাখা যায়, তা শিক্ষা দেন সুফিগণ। নামাজে কেবল রুকু-সেজদা ঠিক মতো হলেই একজন মুফতি বলে দিবেন যে, নামাজ ঠিক হয়েছে। কিন্তু, একজন সুফি সূরা মাউনের ৪ ও ৫ নং আয়াত অনুযায়ী বলবেন যে, কেবল রুকু-সেজদা ঠিক মতো হলেই নামাজ হয়ে যায় না, নামাজে আল্লাহর প্রতি মনোযোগও থাকতে হবে। একইভাবে, ধরুন, আপনাকে আপনার প্রিয়া রাগ করে বললেন যে, "আমি আর তোমার কথা শুনতে চাই না...

হাতমোজা সমাচার

আমার আপু ইনবক্সে আমাকে একটা লেখা পাঠিয়েছেন। হাতমোজা নিয়ে অন্য একজনের লেখা । লেখার নিচে মন্তব্যগুলো পড়ে আমার মনে কিছু প্রশ্ন জেগেছে। ১। মুসলিমদের মহাসম্মেলনে অর্থাৎ হজ্জের সময়ে লাখো লাখো পুরুষের সামনে নারীরা হাতমোজা ও নিকাব পরেন না কেন? ২। নারীরা হাতমোজা ও নিকাব পরে যদি একেবারে ১০০% ঢেকে ফেলেন, তাহলে সূরা নূরের ৩০ নং আয়াতে পুরুষদেরকে দৃষ্টি নত করতে বলা হয়েছে কেন? ৩। সূরা নূরের ৩১ নং আয়াতে বলা হয়েছে, “নারীদের যা প্রকাশ্য থাকার তা ব্যতীত” তাদের বক্ষদেশ আভরণ করার জন্যে। কিন্তু হাতমোজা দিয়ে ১০০% ঢেকে ফেললে নারীদের আর প্রকাশ্য থাকে কি? ৪। রাসূল (স) সহীহ বুখারী ও মুসলিমে বলেছেন, “সহজ কর, কঠিন করো না”। কোনো নারী যদি হাতমোজা না পরতে চান, তাহলে তার জন্যে কঠিন কঠিন নিময় করার জন্যে কি রাসূল (স) বলেছেন? ৫। ঈমান ও তাকওয়া কি মানুষের হৃদয়ে থাকে না হাতে-পায়ে থাকে?