সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ভালোবাসা মানে কি বিবেচনাহীন সব কথা মেনে নেওয়া?

আয়েশা (রা) রাসূল (স)-কে খুব ভালোবাসতেন। রাসূল (স)-ও আয়েশা (রা)-কে খুবই ভালোবাসতেন।

কিন্তু, আয়েশা (রা)-এর বিরুদ্ধে অপবাদ আসার পর, রাসূল (স) তাঁকে বললেন –


“হে আয়েশা, তুমি যদি কোনো গুনাহে জড়িয়ে গিয়ে থাক, তাহলে আল্লাহর কাছে তাওবা ও ইসতিগফার কর।”

রাসূল (স)-এর এই কথার বিপরীতে আয়েশা (রা) তাঁর যুক্তি উপস্থাপন করে বললেন –

“আমি যদি বলি আমি নিষ্পাপ, তাহলে আপনারা বিশ্বাস করবেন না, কিন্তু আল্লাহ জানে আমি নিষ্পাপ। অন্যদিকে, আমি যদি বলি আমি দোষী, তাহলে আপনারা বিশ্বাস করবেন, কিন্তু আল্লাহ জানে আমি নিষ্পাপ। সুতরাং, আমি [তওবা না করে,] ধৈর্য ধারণ করব”।

এরপর, যখন কোর’আন দ্বারা প্রমাণ হলো যে, আয়েশা রা ছিলেন নিষ্পাপ; তখন আয়েশা (রা)-এর মা তাঁকে বললেন – “যাও, রাসূলের কাছে গিয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে এসো”।

তখন আয়েশা (রা) বললেন – “না। আমি আমার আল্লাহ ব্যতীত কারো কাছেই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করব না”।

এখানে আয়েশা (রা) তাঁর নিজের যুক্তি-বুদ্ধির বিরুদ্ধে গিয়ে রাসূল (স)-এর সাধারণ একটি কথাকে মেনে নেননি, তিনি কেবল আল্লাহর কথাই বিনা যুক্তিতে মেনে নিয়েছেন। কিন্তু, তাই বলে, আল্লাহর রাসূলের প্রতি আয়েশা (রা)-এর ভালোবাসা আমাদের চেয়ে কোনো অংশে কম ছিল না।

কেউ তার নিজের যুক্তি দিয়ে রাসূল (স) এর কোনো কথাকে মূল্যায়ন করলে, তাতে রাসূল (স)-এর প্রতি ভালোবাসা কমে যায় না, বরং ভালোবাসা বাড়ে।

ভালোবাসা মানে অন্ধভাবে সবকিছু মেনে নেয়া নয়। নিজের যুক্তি ও বুদ্ধির সাথে সে ভালোবাসাকে সমন্বয় করা যায়, সেটাই প্রকৃত ভালোবাসা।

বিস্তারিত এই হাদিসটিতে পড়ুন।

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আল্লামা জালাল উদ্দিন রূমির বাণী ও কবিতা

ইউরোপ ও অ্যামেরিকা সহ সারাবিশ্বের অমুসলিমরা যে মানুষটির লেখা সবচেয়ে বেশি পড়েন, তিনি মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমি। তাঁর ৫ টি বই ও একটি উপদেশ বাণী রয়েছে। ১। মসনবী, (৬ খণ্ড, ২৬০০০ কবিতার লাইন) ২। দিওয়ানে কবির, (৪০০০০ কবিতার লাইন) ৩। ফিহি মা ফিহি, (বিভিন্ন সভা ও মসলিসে দেয়া বক্তব্য) ৪। মাজালিশ-ই শব, (সাতটি বড় বক্তৃতা) ৫। মাকতুবাত, (১৪৭ টি চিঠি) আর একটি উপদেশ রয়েছে। উপদেশটি হলো – "অল্প খাও, স্বল্প ঘুমাও, কম কথা বল। গুনাহ থেকে দূরে থাক, সবসময় কাজ কর। সুখের অনুসন্ধানী মানুষদের থেকে দূরে থাক, এসব মানুষ তোমাকে যন্ত্রণা দিয়ে যাবে। সৎ, ভালো ও সুভাষী মানুষের সাথে থাক। ভালো মানুষ তারা, যাদের দ্বারা সাধারণ মানুষ উপকৃত হয়। আর, ভালো কথা হলো তাই, যা সংক্ষিপ্ত ও গুরুত্বপূর্ণ। সকল প্রশংসা এক মাত্র আল্লাহর।" [১৭ ডিসেম্বর রূমির 'শবে আরুস'। শবে আরুস অর্থ দ্বিতীয় জন্মের রাত বা মৃত্যুর রাত]

মাথায় রুমাল দেয়া কি মাদানী হুজুর হবার লক্ষণ? নাকি ইহুদি হবার লক্ষণ?

এক তথাকথিত সালাফী মাদানী হুজুর নিজেকে ছাড়া আর সবাইকে ভ্রান্ত মনে করেন। অথচ, নিজেই ইহুদিদের মতো মাথায় রুমাল দিয়ে ওয়াজ করেন। মাথায় রুমাল দেয়ার বিরুদ্ধে যেসব সহীহ হাদিস আছে, তা কি তিনি দেখননি? দলীল – ১ يَتْبَعُ الدَّجَّالَ مِنْ يَهُودِ أَصْبَهَانَ، سَبْعُونَ أَلْفًا عَلَيْهِمُ الطَّيَالِسَةُ দাজ্জালের বাহিনীতে ৭০ হাজার ইহুদী থাকবে, যাদের মাথায় চাদর বা রুমাল থাকবে। সহীহ মুসলিম, মাকতাবায়ে শামেলা, হাদিস নং – ২৯৪৪ দলীল – ২ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَعِيدٍ الخُزَاعِيُّ، حَدَّثَنَا زِيَادُ بْنُ الرَّبِيعِ، عَنْ أَبِي عِمْرَانَ، قَالَ: نَظَرَ أَنَسٌ إِلَى النَّاسِ يَوْمَ الجُمُعَةِ، فَرَأَى طَيَالِسَةً، فَقَالَ: «كَأَنَّهُمُ السَّاعَةَ يَهُودُ خَيْبَرَ» আনাস ইবনু মালিক (রা) জুমার দিনে মসজিদের মধ্যে সমবেত মানুষের দিকে তাকালেন। তিনি অনেকের মাথায় রুমাল দেখতে পান। তখন তিনি বলেন, এরা এখনো ঠিক খাইবারের ইহুদীদের মত। সহীহ বুখারী, মাকতাবায়ে শামেলা, হাদিস নং – ৪২০৮ দলীল – ৩ قال رسول الله – صلى الله عليه وسلم – : ” قال لقمان لابنه وهو يعظه : يا بني إياك والتقنع ، فإنها مخوفة بالليل مذلة بالنهار রাসূল (স) ...

আহলে কোর'আনের কিছু প্রশ্ন ও তার জবাব - ২

মোহাম্মদ Junaid ভাইয়ের কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও তার উত্তর। ১) ইমামদেরকে standard মানতে হবে কেন? - ইমামদেরকে আমরা প্লেটো বা এরিস্টটলের মতো জ্ঞানী, স্কলার ও আলেম মনে করি, standard নয়। ২) ওনাদের status কী? - পৃথিবীর হাজার হাজার স্কলারের মাঝে ইমামরাও অন্তর্ভুক্ত। ৩) ওনাদের কি সুসংবদ্ধ চিন্তা ছিল? - জ্বী, উনাদের কাজ-ই ছিলো চিন্তাকে ফ্রেম দেওয়া। ৪) ওনাদের রচনাসমগ্ৰ কি সুলভ? - দুর্ভাগ্য আমাদের। বাংলা ভাষায় উনাদের বই পুস্তক অনুবাদ হয়নি। কিন্তু, উনাদের প্রচুর বই আছে, যা আমরা জানি না। ৫) প্রামাণিকতা প্রশ্নাতীত? - জী। ৬) বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চা তো প্রবহমান নদীর মতো। পুরা যুগের কারো পায়রবিতে আটকে থাকতে হবে কেন? - নদী যেমন তার উৎসের সাথে ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণ করতে চায় না, তেমনি আমরাও আমাদের অতীতের সকল জ্ঞানের উৎসের সাথে বাঁধ নির্মাণ করতে চায় না। বরং আমাদের জ্ঞানের উৎসে যাবার রাস্তা খোলা রাখতে চাই। ৭) জ্ঞানের পরিমাপক কী? - একজন মানুষ তার সময়ের কতগুলো সমস্যার সমাধান দিতে পেরেছেন, সেটাই তার জ্ঞানের পরিমাপক। ৮) ওনারা কি কিয়ামত দিবসে আমাদের কাজের দায়দায়িত্ব গ্ৰহণ করবেন? - অবশ্যই না। তবে, পৃথিবীকে জানা...