সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

কোর'আনের একটি সূরার সাথে পরবর্তী সূরার সম্পর্ক

আল কোর’আন শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত একটা চেইনের মত; এর একটি আয়াত অন্য একটি আয়াতের সাথে সংযুক্ত, এবং একটি সূরা অন্য একটি সূরার সাথে সম্পর্কিত।

আল কোর’আনের অন্যতম দুটি বৈশিষ্ট্য হলো –

- প্রত্যেকটি সূরার প্রথম আয়াতগুলোর সাথে শেষের আয়াতগুলো ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এবং
- কোর’আনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রত্যেকটি সূরা একটির সাথে অন্যটি সম্পর্কিত।

কিছু উদাহরণ দিচ্ছি।

সূরা ফাতিহার প্রথম ও শেষ আয়াতের সম্পর্ক। 

الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ
[সকল প্রশংসা আল্লাহর, যিনি জগতসমূহের প্রতিপালক।]

صِرَاطَ الَّذِينَ أَنْعَمْتَ عَلَيْهِمْ غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلَا الضَّالِّينَ
[যাদেরকে তুমি অনুগ্রহ দান করেছ, সে সমস্ত লোকের পথ আমাদের দেখাও। তাদের পথ নয়, যাদের প্রতি তোমার ক্রোধ নিপতিত হয়েছে এবং যারা পথভ্রষ্ট হয়েছে।]

দেখুন, সূরা ফাতিহার প্রথম আয়াত হলো আল্লাহর উপর মানুষের সন্তুষ্টির বর্ণনা, এবং শেষ আয়াতটি হলো মানুষের উপর আল্লাহর সন্তুষ্টির বর্ণনা।

সূরা ফাতিহার সাথে সূরা বাকারার সম্পর্ক। 

اهْدِنَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيمَ
“আমাদেরকে সরল পথ প্রদর্শন কর।” [সূরা ফাতিহা – ৫]

ذَٰلِكَ الْكِتَابُ لَا رَيْبَ ۛ فِيهِ ۛ هُدًى لِلْمُتَّقِينَ
“এ সেই কিতাব যাতে কোনই সন্দেহ নেই। এটি পরহেজগারদের জন্য পথ প্রদর্শনকারী।” [সূরা বাকারা - ২]

দেখুন, সূরা ফাতিহায় আমরা আল্লাহর কাছে সরল পথ চেয়ে প্রার্থনা করেছি, আর সূরা বাকারার শুরুতেই আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে সেই সরল পথটি দেখিয়ে দিয়েছেন।

সূরা বাকারার শুরু ও শেষ আয়াতের সম্পর্ক।

لَا يُكَلِّفُ اللَّهُ نَفْسًا إِلَّا وُسْعَهَا ۚ لَهَا مَا كَسَبَتْ وَعَلَيْهَا مَا اكْتَسَبَتْ ۗ رَبَّنَا لَا تُؤَاخِذْنَا إِنْ نَسِينَا أَوْ أَخْطَأْنَا ۚ رَبَّنَا وَلَا تَحْمِلْ عَلَيْنَا إِصْرًا كَمَا حَمَلْتَهُ عَلَى الَّذِينَ مِنْ قَبْلِنَا ۚ رَبَّنَا وَلَا تُحَمِّلْنَا مَا لَا طَاقَةَ لَنَا بِهِ ۖ وَاعْفُ عَنَّا وَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَا ۚ أَنْتَ مَوْلَانَا فَانْصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِينَ

“আল্লাহ কারো উপর এমন কোনো কষ্টদায়ক দায়িত্ব অর্পণ করেন না যা তার সাধ্যাতীত। সে ভালো যা উপার্জন করে সেটা তার হয়, আবার খারাপ যা উপার্জন করে সেটাও তার উপর বর্তায়। হে আমাদের পালনকর্তা, যদি আমরা ভুলে যাই কিংবা ভুল করি, তবে আমাদেরকে পাকড়াও করো না। হে আমাদের প্রতিপালক, আমাদের পূর্ববর্তীগণের উপর যেমন গুরুদায়িত্ব অর্পণ করেছিলে, আমাদের উপর তেমন দায়িত্ব অর্পণ করো না। হে আমাদের প্রতিপালক, আমাদের উপর এমন ভার অর্পণ করো না যা বহন করার শক্তি আমাদের নেই। আমাদের পাপ মোচন কর, আমাদেরকে ক্ষমা কর, আমাদের প্রতি দয়া কর, তুমিই আমাদের অভিভাবক। সুতরাং কাফির সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদেরকে সাহায্য কর ।” [সূরা বাকারা – ২৮৬]

দেখুন, আমাদেরকে সরল পথ দেখানোর মাধ্যমে সূরা বাকারা শুরু হয়েছে। এরপর, এই সূরায় আল্লাহ তায়ালা তাঁর সরল পথের বিভিন্ন ধাপ আমাদের কাছে বর্ণনা করেছেন। এবার উপরে সূরাটির শেষ আয়াতটি লক্ষ্য করুন – সরল পথে চলতে গিয়ে আমাদের যাতে কষ্ট না হয়, চলার পথে আমাদের জানা-অজানা ভুল-ত্রুটিগুলো যাতে আল্লাহ ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখেন, এখানে সেই প্রার্থনা করা হয়েছে।

মনে আছে নিশ্চয়ই, সূরা ফাতিহায় আমরা কেবল সরল পথের প্রার্থনা করেছিলাম। তখন আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে সেই সরল পথটি দেখিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই সরল পথে চলতে গিয়ে আমরা বুঝলাম যে, এ পথে চলা এত সহজ নয়। এ পথে চলতে গেলে অনেক ভুল-ভ্রান্তি হয়, অনেক শত্রু তৈরি হয়। তাই, সূরা বাকারার শেষে এসে আমরা প্রার্থনা করছি যাতে সরল পথে চলার সময় আল্লাহ তায়ালা আমাদের অভিভাবক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন, এবং তিনি যাতে শত্রুদের বিরুদ্ধে আমাদের সাহায্য করেন।

সূরা বাকারা ও সূরা আলে ইমরানের সম্পর্ক।

اللَّهُ لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ
“আল্লাহ ছাড়া কোন উপাস্য নেই, তিনি চিরঞ্জীব, সবকিছুর ধারক।” [সূরা আলে ইমরান – ২]

দেখুন, সূরা বাকারার শেষে আমরা আল্লাহর কাছে আমাদের দুর্বলতার জন্যে সাহায্য চেয়েছিলাম। তাই সূরা আলে ইমরানের শুরুতেই আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে সাহস ও শক্তি যোগানো জন্যে বলছেন – তিনি ছাড়া আর কোনো কিছুরই অস্তিত্ব নেই। সূরাটির ৩ নং আয়াতে আমাদেরকে পবিত্র কোর’আনের কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন। কারণ, আল কোর’আন-ই হলো আমাদের শক্তি সঞ্চয়ের প্রধান মাধ্যম। এরপর, ৪ নং আয়াতে বলছেন – ‘আল্লাহ পরাক্রমশালী ও শাস্তিদাতা।’ ৫ নং আয়াতে বলছেন – ‘তাঁর নিকট আসমান ও জমিনের কোনো কিছুই গোপন থাকে না।’ ৬ নং আয়াতে বলছেন – ‘তিনি প্রবল পরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময়।’ অর্থাৎ, একের পর এক আয়াতে আল্লাহ তায়ালা তাঁর পথে চলার জন্যে আমাদেরকে সাহস যুগিয়ে যাচ্ছেন।

সূরাটিতে বলা হচ্ছে সরল পথে চলতে গেলে দুটি উপকরণ প্রয়োজন। এক – আল্লাহর সাহায্য ও শক্তি। দুই – আল কোর’আন।

## সূরা আলে ইমরানের শুরু ও শেষ আয়াতের সম্পর্ক। ##

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اصْبِرُوا وَصَابِرُوا وَرَابِطُوا وَاتَّقُوا اللَّهَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ
“হে ঈমানদানগণ! ধৈর্য ধারণ কর এবং মোকাবেলায় দৃঢ়তা অবলম্বন কর। আর আল্লাহকে ভয় করতে থাক যাতে তোমরা তোমাদের উদ্দেশ্য লাভে সমর্থ হতে পার ।” [সূরা আলে ইমরান - ২০০]

দেখুন, সূরা আলে ইমরানের শুরুতে আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে তাঁর পথে চলার উপায় ও উপকরণগুলোর বর্ণনা দিয়েছেন। আর সূরাটির একেবারে শেষ আয়াতে এসে আল্লাহ বলছেন – সরল পথে চলার সময় ধৈর্য ধারণ কর এবং শত্রুর মোকাবেলায় দৃঢ়তা অবলম্বন কর।

## সূরা আলে ইমরান ও সূরা নিসার সম্পর্ক। ##

يَا أَيُّهَا النَّاسُ اتَّقُوا رَبَّكُمُ الَّذِي خَلَقَكُمْ مِنْ نَفْسٍ وَاحِدَةٍ وَخَلَقَ مِنْهَا زَوْجَهَا وَبَثَّ مِنْهُمَا رِجَالًا كَثِيرًا وَنِسَاءً ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ الَّذِي تَسَاءَلُونَ بِهِ وَالْأَرْحَامَ ۚ إِنَّ اللَّهَ كَانَ عَلَيْكُمْ رَقِيبًا

“হে মানব সমাজ! তোমরা তোমাদের পালনকর্তাকে ভয় কর, যিনি তোমাদেরকে এক ব্যক্তি থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং যিনি তার থেকে তার সঙ্গিনীকে সৃষ্টি করেছেন; আর বিস্তার করেছেন তাদের দু’জন থেকে অগণিত পুরুষ ও নারী। আর আল্লাহকে ভয় কর, যাঁর নামে তোমরা একে অপরের নিকট যাচঞ্ঝা করে থাক এবং আত্মীয় জ্ঞাতিদের ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন কর। নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের ব্যাপারে সচেতন রয়েছেন।” [সূরা নিসা -১]

দেখুন, সূরা আলে ইমরানের একেবারে শেষ বাক্য ছিল – “তোমরা আল্লাহকে ভয় করতে থাক যাতে তোমরা তোমাদের উদ্দেশ্য লাভে সমর্থ হতে পার।” আর সূরা নিসার প্রথম বাক্যই হচ্ছে “হে মানব সমাজ! তোমরা তোমাদের পালনকর্তাকে ভয় কর।” অর্থাৎ, একটি সূরার শেষ হয়েছে ‘তাকওয়া’ শব্দ দিয়ে, আবার পরের সূরাটি শুরু হয়েছে ‘তাকওয়া’ শব্দ দিয়ে।

## সূরা নিসার শুরু ও শেষ আয়াতের সম্পর্ক। ##

يَسْتَفْتُونَكَ قُلِ اللَّهُ يُفْتِيكُمْ فِي الْكَلَالَةِ ۚ إِنِ امْرُؤٌ هَلَكَ لَيْسَ لَهُ وَلَدٌ وَلَهُ أُخْتٌ فَلَهَا نِصْفُ مَا تَرَكَ ۚ وَهُوَ يَرِثُهَا إِنْ لَمْ يَكُنْ لَهَا وَلَدٌ ۚ فَإِنْ كَانَتَا اثْنَتَيْنِ فَلَهُمَا الثُّلُثَانِ مِمَّا تَرَكَ ۚ وَإِنْ كَانُوا إِخْوَةً رِجَالًا وَنِسَاءً فَلِلذَّكَرِ مِثْلُ حَظِّ الْأُنْثَيَيْنِ ۗ يُبَيِّنُ اللَّهُ لَكُمْ أَنْ تَضِلُّوا ۗ وَاللَّهُ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ

“মানুষ আপনার নিকট জানতে চায়। অতএব, আপনি বলে দিন, আল্লাহ তোমাদিগকে পিতামাতাহীন ও নিঃসন্তান ব্যক্তির মীরাস সংক্রান্ত সুস্পষ্ট নির্দেশ বাতলে দিচ্ছেন, যদি কোন পুরুষ মারা যায় এবং তার কোন সন্তানাদি না থাকে এবং এক বোন থাকে, তবে সে পাবে তার পরিত্যক্ত সম্পত্তির অর্ধেক অংশ এবং সে যদি নিঃসন্তান হয়, তবে তার ভাই তার উত্তরাধিকারী হবে। তা দুই বোন থাকলে তাদের জন্য পরিত্যক্ত সম্পত্তির দুই তৃতীয়াংশ। পক্ষান্তরে যদি ভাই ও বোন উভয়ই থাকে, তবে একজন পুরুষের অংশ দুজন নারীর সমান। তোমরা পথভ্রষ্ট হবে – এই আশঙ্কায় আল্লাহ তোমাদিগকে সুস্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিচ্ছেন। আর আল্লাহ হচ্ছেন সর্ব বিষয়ে পরিজ্ঞাত ।” [সূরা নিসা -১৭৬]

দেখুন, সূরা নিসা শুরু হয়েছে মানুষের জন্মের কথা উল্লেখ করে, আর সূরাটি শেষ হয়েছে মানুষের মৃত্যুর কথা উল্লেখ করে। আবার, সূরাটির শুরুতে বলা হয়েছে আত্মীয়দের হকের ব্যাপারে সতর্ক হবার জন্যে, আর সূরাটির শেষে বলা হয়েছে আত্মীয়দের মাঝে সম্পত্তি বণ্টন সম্পর্কে।

মজার ব্যাপার হলো, এই সূরাটির শেষে এসেও আল্লাহ তায়ালা বলছেন – আমি তোমাদেরকে এসব বিস্তৃতভাবে বর্ণনা করছি, যাতে তোমরা পথভ্রষ্ট না হয়। অর্থাৎ, আল্লাহ তায়ালার সরল পথে চলার ক্ষেত্রে যে সমস্যাগুলো হবে, এবার তিনি একে একে সেসব বর্ণনা করা শুরু করেছেন।

এভাবে কোর’আনের সবগুলো আয়াত ও সূরা একটির সাথে অন্যটি সম্পর্কিত।

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আল্লামা জালাল উদ্দিন রূমির বাণী ও কবিতা

ইউরোপ ও অ্যামেরিকা সহ সারাবিশ্বের অমুসলিমরা যে মানুষটির লেখা সবচেয়ে বেশি পড়েন, তিনি মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমি। তাঁর ৫ টি বই ও একটি উপদেশ বাণী রয়েছে। ১। মসনবী, (৬ খণ্ড, ২৬০০০ কবিতার লাইন) ২। দিওয়ানে কবির, (৪০০০০ কবিতার লাইন) ৩। ফিহি মা ফিহি, (বিভিন্ন সভা ও মসলিসে দেয়া বক্তব্য) ৪। মাজালিশ-ই শব, (সাতটি বড় বক্তৃতা) ৫। মাকতুবাত, (১৪৭ টি চিঠি) আর একটি উপদেশ রয়েছে। উপদেশটি হলো – "অল্প খাও, স্বল্প ঘুমাও, কম কথা বল। গুনাহ থেকে দূরে থাক, সবসময় কাজ কর। সুখের অনুসন্ধানী মানুষদের থেকে দূরে থাক, এসব মানুষ তোমাকে যন্ত্রণা দিয়ে যাবে। সৎ, ভালো ও সুভাষী মানুষের সাথে থাক। ভালো মানুষ তারা, যাদের দ্বারা সাধারণ মানুষ উপকৃত হয়। আর, ভালো কথা হলো তাই, যা সংক্ষিপ্ত ও গুরুত্বপূর্ণ। সকল প্রশংসা এক মাত্র আল্লাহর।" [১৭ ডিসেম্বর রূমির 'শবে আরুস'। শবে আরুস অর্থ দ্বিতীয় জন্মের রাত বা মৃত্যুর রাত]

ওমরের ওয়াজে নারীর বাধা

মানুষের সামনে ওয়াজ করছেন ওমর (রা)। তিনি তখন অর্ধেক পৃথিবীর খলিফা। বিশাল ক্ষমতাবান। কিন্তু, তাঁর বিরোধিতা করে এক বৃদ্ধ দুর্বল নারী দাঁড়িয়ে গেলেন। দুর্বল নারীটি ওমর (রা)-কে বললেন, "হে ওমর, আল্লাহকে ভয় করুন। যেখানে আল্লাহ তায়ালা সূরা নিসার ২০ নং আয়াতে নারীদের জন্যে দেনমোহর সীমিত করে দেননি, সেখানে আপনি দিচ্ছেন কেন?" ওমর (রা) বললেন, "নারীটি ঠিক বলেছে, ওমর ভুল করেছে।" [ইবনে হযর আল-আসকালানি,ফাতুল-বারী, ৯:১৬৭] ভাগ্য ভালো ঐ দুর্বল নারী সাহাবীটির। তিনি অর্ধেক পৃথিবীর খলিফা ওমর (রা)-কে বাধা দিয়েছিলেন। যদি ঐ নারীটি এমন কোনো হুজুরকে বাধা দিতেন, যার সাথে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর যোগাযোগ আছে, তাহলে অবস্থাটা কি হতো দেখুন...

What is The Ruling Regarding a Women Going to Hajj Without a Mahram?

Answered by Dr. Yusuf al-Qaradawi | Translated by Sister Marwa The original rule stipulated in shari’a that a woman is not to travel alone.  Rather, she has to be accompanied by her husband or any other mahram of hers.  This rule is supported by narrations of Bukhari and others that Ibn-Abbas (ra) said, that the Prophet (pbuh) said, “A woman should not travel except with a mahram, and no man should visit her except in the presence of a mahram.” Abu-Hurairah related the following on behalf of the Prophet (pbuh), “It is not permissible for a woman who believes in Allah and the Last Day to travel for one day and night except with a mahram.” Abu-Sa’id reported that the Prophet (pbuh) said, “A woman should not travel for two days except she is accompanied by her husband or a mahram.”