সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

প্রেম ও বিয়ে : সমস্যা ও সমাধান

বড় ভাই ও বন্ধুদের মাঝে যাদের ‘প্রেম-বিয়ে’র গল্প আমাকে শুনতে হয়েছে, সবগুলো মোটামুটি একই।

ছেলে-মেয়ে দু’জন দুজনকে দেখে পছন্দ হয়েছে। কিছুদিন প্রেম করেছে। এরপর, মেয়ের পরিবার মেয়েকে বিয়ে দিয়ে দিতে চাইলো। কিন্তু ছেলে তখনো বেকার, পড়াশুনা করে। বেকার ছেলের কাছে মেয়ের পরিবার কোনোভাবেই মেয়ে বিয়ে দিবে না। কারণ, ছেলে বিয়ে করে মেয়েকে রাখবে কোথায়? খাওয়াবে কোত্থেকে, এবং পরাবে কি?

সুতরাং, ছেলে-মেয়ের এ সম্পর্ক কোনো ভাবেই মেনে নেয়া হবে না – এটাই মেয়ের পরিবারের শেষ সিদ্ধান্ত হয়।

তারপর, তারা দু’জন পালিয়ে বিয়ে করে ফেলেন। এখন দুই পরিবারের কেউই এ বিয়ে মেনে নিচ্ছে না।
-
এ সমস্যাটি আমাদের সমাজে প্রচুর। বন্ধু হিসাবে আপনি যদি বন্ধুর পক্ষে কথা বলেন, তাহলে বন্ধুর পরিবার আপনাকে খারাপ বলবে। অন্যদিকে, আপনি যদি বন্ধুর পরিবারের পক্ষে কথা বলেন, তাহলে আপনার প্রিয় বন্ধুকে আপনি চিরতরে হারাতে হবে।

সুতরাং, এ ক্ষেত্রে সমাধান কি?

কেউ কেউ হয়তো বলবেন, যেহেতু তারা প্রেম করে বিয়ে করেছে, সুতরাং তাদের পক্ষে না যাওয়া-ই ভালো। আবার, কেউ কেউ হয়তো বলবেন, তারা যেহেতু বিয়ে করেই ফেলেছে, সুতরাং পরিবারের উচিত এই বিয়ে মেনে নেয়া।

আসলে, এ ক্ষেত্রে ঢালাওভাবে কাউকে দোষী বা কাউকে সাধু বলে দেয়া যায় না।

সমস্যা হলো, আমরা কোর’আন থেকে শিক্ষা নেই না। যদি ঐসব ছেলে-মেয়ে এবং তাদের পরিবার সবাই কোর’আন থেকে শিক্ষা নিত, তাহলে এ সমস্যাটি সৃষ্টি হত না।

সুতরাং, নিজের ক্ষেত্রে এ ধরণের সমস্যা সৃষ্টি হবার আগেই সূরা কাসাসের (২৫ থেকে ২৮) চারটি আয়াত পড়ে নিন। এখানে আল্লাহ তায়ালা মূসা (আ)-এর বিয়ের ঘটনাটির মাধ্যমে আমাদেরকে এ সমস্যাটির সমাধান দিয়ে দিচ্ছেন।

আল্লাহ বলছেন –

“বালিকাদ্বয়ের একজন লজ্জাজড়িত চরণে মূসার কাছে এসে বলল, ‘আমাদের পশুদেরকে আপনি যে পানি পান করিয়েছেন, তার বিনিময় দেয়ার জন্যে আমাদের পিতা আপনাকে ডাকছেন’। মূসা (বালিকাদের পিতার) নিকট এসে সব কিছু বলার পর তিনি বললেন, ‘ভয় করো না, তুমি জালেম সম্প্রদায়ের কবল থেকে রক্ষা পেয়েছ’।

“বালিকাদ্বয়ের একজন বলল, ‘আব্বু, তুমি উনাকে একটা চাকুরী দিয়ে দাও। কারণ, তোমার কর্মচারী হিসেবে সে-ই উত্তম হবে, যে শক্তিশালী ও বিশ্বস্ত’।

“তাদের পিতা মূসাকে বললেন, ‘আমি আমার এই কন্যাদ্বয়ের একজনকে তোমার সাথে বিয়ে দিতে চাই। তবে শর্ত হলো, তুমি আট বছর আমার এখানে চাকুরী করবে, তুমি যদি দশ বছর পূর্ণ কর, তা তোমার ইচ্ছা। আমি তোমাকে কষ্ট দিতে চাই না। আল্লাহ চায় তো তুমি আমাকে সৎকর্মপরায়ণ হিসাবে পাবে।”

“মূসা বললেন, আমার ও আপনার মধ্যে এই চুক্তি-ই রইলো। আমি দু’টি মেয়াদের যে কোন একটি পূর্ণ করলে আমার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ থাকবে না। আমরা যা বলছি, আল্লাহ তার সাক্ষী।”

মূসা (আ)-এর ঘটনাটি লক্ষ্য করুন। দেখুন –

মূসা (আ) তখনো নবী হননি, এটি তিনি নবী হবার অন্তত ১০ বছর আগের ঘটনা।

তরুণ মূসার সাহস ও যোগ্যতা দেখে একটি তরুণী মেয়ে তাকে পছন্দ করলো। মেয়েটি মূসার সাথে গোপনে প্রেমে জড়িয়ে না পড়ে কথাটা তার পরিবারকে জানালো। পরিবার দেখল যে, তরুণ মূসার কোনো কাজ নেই, সে একেবারেই বেকার। মেয়েটি তখন তার পরিবারকে বলল – ‘মূসাকে কিছু সময় দিন, যাতে সে নিজের পায়ে নিজে দাঁড়াতে পারে এবং স্বাবলম্বী হতে পারে’। তখন মেয়ের বাবা বলল – ‘আচ্ছা, ঠিক আছে, আমি তোমার কাছে আমার মেয়ে বিয়ে দিব, তবে শর্ত হলো, তোমাকে আগে স্বাবলম্বী হতে হবে। অর্থাৎ, ৮/১০ বছর আমাদের এখানে কাজ করতে হবে’।

তরুণ মূসা তখন হবু শ্বশুরের দেয়া শর্তটি মেনে নিয়ে নিলেন। এবং, তাঁর যাবতীয় সমস্যার সমাধান হয়ে গেল।

এরপর, মূসা (আ) ও তার স্ত্রী সুখে শান্তিতে জীবন কাটাতে লাগলেন।
-
একটি ছেলে ও একটি মেয়ে, দু’জন দু’জনকে দেখে ভালো লাগতেই পারে। কিন্তু, ভালো লাগলেই সাথেসাথে গোপনে প্রেম শুরু করে দেয়া উচিত না। প্রথমে উভয়ের পরিবারকে বিষয়টি জানানো উচিত। এটা ছেলে-মেয়ে উভয়ের দায়িত্ব।

মূসা (আ)-কে যে মেয়েটির ভালো লেগেছিল, সে মেয়েটি প্রথমে তার পরিবারকে বিষয়টি জানিয়েছিল। অন্যদিকে, ইউসুফ (আ)-কে যে মেয়েটি ভালবেসেছিল, সে গোপনেই ইউসুফ (আ)-এর সাথে সম্পর্ক করতে ছেয়েছিল। ভুলটা এখানেই। কাউকে ভালো লাগলে প্রথমেই বিষয়টি পরিবারকে জানিয়ে দেয়া উচিত।

কিন্তু, আমি জানি, পরিবারকে জানানোর পর,

এসব ক্ষেত্রে সাধারণত ছেলের পরিবার থেকে ততটা বাধা না আসলেও মেয়ের পরিবার বাধার পাহাড় হয়ে দাঁড়ায়। কারণ, মেয়ের পরিবার ভাবে, বেকার ছেলে, খাওয়াবে কি? আর, পরাবে কি?

আসলে, মেয়ের পরিবারের উচিত, কেবল ছেলের বেকারত্ব না দেখে ছেলেটি কর্মঠ ও বিশ্বস্ত কিনা, তা দেখা। ছেলেটি যদি কর্মঠ ও বিশ্বস্ত হয়, তাহলে তাকে কিছু সময় দিতে হবে, যাতে সে পড়াশুনা শেষ করে চাকরি-বাকরি শুরু করতে পারে। যেমনটা মূসা (আ)-এর হবু শ্বশুর করেছিলেন।

আপনি আপনার মেয়েকে একজন স্বাবলম্বী ছেলের কাছে বিয়ে দিবেন, সমস্যা নেই। কিন্তু, এ ছেলেকে আপনি ফিরিয়ে দিচ্ছেন কেন? আপনি তাকে কিছু শর্ত সাপেক্ষে কথা দিয়ে রাখতে পারেন যে, আপনার মেয়েকে তার কাছেই বিয়ে দিবেন। মূসা (আ)-এর হবু শ্বশুর তার মেয়ের হবু জামাইকে ৮-১০ বছর সময় দিয়েছিলেন, আপনিও আপনার হবু জামাইকে কিছুদিন সময় দিন। সে যদি তার কথা রাখে, আপনিও আপনার কথা রাখবেন।

তাহলেই তো সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। তাই না?

হুম। তবে, সমস্যা আরেকটু আছে।

ধরুন, হবু শ্বশুরের সাথে আপনার চুক্তি হলো। হবু শ্বশুরের দেয়া শর্ত আপনি পূরণ করতে পারলেই তবে আপনি তার মেয়েকে বিয়ে করবেন। কিন্তু, হঠাৎ, আপনার মন পরিবর্তন হয়ে গেল। আপনি ভাবলেন, এই পরিবারে সাথে আপনি আত্মীয়তা করবেন না। তখন কি হবে?

এ ক্ষেত্রেও কোর’আনে সমাধান রয়েছে।

মূলত, নিছের আয়াত দুটি বলার জন্যেই উপরের দীর্ঘ ভূমিকাটি আমাকে লিখতে হয়েছে। আমরা সাধারণত জানি, কেবল বিয়ে হলেই তালাক বা সম্পর্ক বিচ্ছেদের ব্যাপারটি আসে। কিন্তু বিয়ের আগেও প্রয়োজন হলে ‘ব্রেক-আপ’ বা সম্পর্ক বিচ্ছেদ করা যায়।

আল্লাহ তায়ালা সূরা বাকারায় বলছেন –

“২৩৬। যদি স্ত্রীদেরকে স্পর্শ করার আগে এবং মোহর নির্ধারণ করার পূর্বে তাদেরকে তালাক দিয়ে দাও, তবে তাতেও তোমাদের কোন পাপ নেই। তবে তাদেরকে কিছু উপহার দেবে। সামর্থ্যবানেরা তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী এবং অসচ্ছল ব্যক্তিরা তাদের সাধ্য অনুযায়ী খরচপত্রের ব্যবস্থা করবে। প্রচলিত যে খরচ দিতে হয়, তা দেয়া সৎকর্মশীলদের উপর দায়িত্ব।”

“২৩৭। আর, যদি স্ত্রীদেরকে স্পর্শ করার আগে, কিন্তু মোহর নির্ধারণ করার পরে তাদেরকে তালাক দিয়ে দাও, তাহলে যে মোহর নির্ধারণ করা হয়েছে তার অর্ধেক তাদেরকে দিয়ে দিতে হবে। অবশ্য, যদি নারীরা মাফ করে দেয় কিংবা বিয়ের বন্ধন যার অধিকারে সে যদি মাফ করে দেয় তবে তা হবে পরহেজগারির নিকটবর্তী। তোমরা পারস্পরিক সহানুভূতির কথা ভুলে যেয়ো না। নিশ্চয় তোমরা যা কিছু কর আল্লাহ তা অত্যন্ত ভাল করেই দেখেন।”

অর্থাৎ, মোহর নির্ধারণের আগে সম্পর্ক ‘ব্রেক-আপ’ হয়ে গেলে কোনো গুনাহ নেই, তবে মেয়েকে কিছু উপহার দেয়া উচিত। আর, মোহর নির্ধারণ হবার পরে কিন্তু বিয়ের আগে সম্পর্ক ‘ব্রেক-আপ’ হয়ে গেলে মোহরের অর্ধেক মেয়েকে দিতে হবে। অবশ্য মেয়েটি যদি মাফ করে দেয়, তাহলে ভিন্ন কথা।

এ আয়াত দুটি থেকে একটি বিষয় স্পষ্ট যে, বিয়ের একাধিক স্তর রয়েছে। যেমন বিয়ের চুক্তি হবার পর থেকে মোহর নির্ধারণ করার আগ পর্যন্ত একটি সময়। এবং মোহর নির্ধারণ পর থেকে বিয়ে হবার আগ পর্যন্ত একটি সময়।

বাংলাদেশে থাকাকালীন সময়ে উপরোক্ত আয়াত দুটি আমার কাছে ততটা গুরুত্বপূর্ণ মনে হত না। কারণ, বাংলাদেশে পারিবারিকভাবে যে বিয়েগুলো হয়, সেগুলো সাধারণত এক সপ্তাহ বা এক মাসের মধ্যেই মেয়ে দেখা, পছন্দ হওয়া, মোহর নির্ধারিত হওয়া এবং বিয়ে-সাদি সব কিছু সম্পূর্ণ হয়ে যায়। ফলে এই অল্প সময়ের মধ্যে বিয়ে বিচ্ছেদের ঘটনা একেবারেই ঘটে না। ঘটলেও একটা-দুইটা।

কিন্তু তুরস্কে ভিন্ন অবস্থা দেখলাম। এখানে ধার্মিক পরিবারের ছেলে-মেয়েরা একে অপরকে পছন্দ করলে তারা প্রথমে তাদের পরিবারকে জানায়। পরিবার বিষয়টি সহজভাবে মেনে নেয়। এবং পারিবারিকভাবে তাদের এনগেজমেন্ট হয়ে থাকে। ছেলে চাকরি-বাকরি কিছু শুরু করার পর তাদের বিয়ে হয়। এতে কখনো কখনো চার-পাঁচ বছর ছেলে-মেয়েকে এঙ্গেজমেন্ট অবস্থায় থাকতে হয়।

কখনো কখনো এই সম্পর্ক টিকে থাকে, আবার কখনো কখনো তারা পরস্পরের সম্মতিতে সম্পর্ক ভেঙে দেয়।

এই বিষয়টি দেখার পর উপরের আয়াত দুটি আমি ভালোভাবে বুঝতে পেরেছি। আসলে কোর’আন কেবল সৌদি আরব বা আমাদের বাংলাদেশের জন্যে নাযিল হয়নি, এটি নাযিল হয়েছে বৈশ্বিক সব ধরণের সমস্যা নিরসন করার জন্যে।

আল কোর'আন আমার-আপনার-সবার কথা চিন্তা করে। সবার সমস্যার সমাধান দেয়।

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আল্লামা জালাল উদ্দিন রূমির বাণী ও কবিতা

ইউরোপ ও অ্যামেরিকা সহ সারাবিশ্বের অমুসলিমরা যে মানুষটির লেখা সবচেয়ে বেশি পড়েন, তিনি মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমি। তাঁর ৫ টি বই ও একটি উপদেশ বাণী রয়েছে। ১। মসনবী, (৬ খণ্ড, ২৬০০০ কবিতার লাইন) ২। দিওয়ানে কবির, (৪০০০০ কবিতার লাইন) ৩। ফিহি মা ফিহি, (বিভিন্ন সভা ও মসলিসে দেয়া বক্তব্য) ৪। মাজালিশ-ই শব, (সাতটি বড় বক্তৃতা) ৫। মাকতুবাত, (১৪৭ টি চিঠি) আর একটি উপদেশ রয়েছে। উপদেশটি হলো – "অল্প খাও, স্বল্প ঘুমাও, কম কথা বল। গুনাহ থেকে দূরে থাক, সবসময় কাজ কর। সুখের অনুসন্ধানী মানুষদের থেকে দূরে থাক, এসব মানুষ তোমাকে যন্ত্রণা দিয়ে যাবে। সৎ, ভালো ও সুভাষী মানুষের সাথে থাক। ভালো মানুষ তারা, যাদের দ্বারা সাধারণ মানুষ উপকৃত হয়। আর, ভালো কথা হলো তাই, যা সংক্ষিপ্ত ও গুরুত্বপূর্ণ। সকল প্রশংসা এক মাত্র আল্লাহর।" [১৭ ডিসেম্বর রূমির 'শবে আরুস'। শবে আরুস অর্থ দ্বিতীয় জন্মের রাত বা মৃত্যুর রাত]

ওমরের ওয়াজে নারীর বাধা

মানুষের সামনে ওয়াজ করছেন ওমর (রা)। তিনি তখন অর্ধেক পৃথিবীর খলিফা। বিশাল ক্ষমতাবান। কিন্তু, তাঁর বিরোধিতা করে এক বৃদ্ধ দুর্বল নারী দাঁড়িয়ে গেলেন। দুর্বল নারীটি ওমর (রা)-কে বললেন, "হে ওমর, আল্লাহকে ভয় করুন। যেখানে আল্লাহ তায়ালা সূরা নিসার ২০ নং আয়াতে নারীদের জন্যে দেনমোহর সীমিত করে দেননি, সেখানে আপনি দিচ্ছেন কেন?" ওমর (রা) বললেন, "নারীটি ঠিক বলেছে, ওমর ভুল করেছে।" [ইবনে হযর আল-আসকালানি,ফাতুল-বারী, ৯:১৬৭] ভাগ্য ভালো ঐ দুর্বল নারী সাহাবীটির। তিনি অর্ধেক পৃথিবীর খলিফা ওমর (রা)-কে বাধা দিয়েছিলেন। যদি ঐ নারীটি এমন কোনো হুজুরকে বাধা দিতেন, যার সাথে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর যোগাযোগ আছে, তাহলে অবস্থাটা কি হতো দেখুন...

What is The Ruling Regarding a Women Going to Hajj Without a Mahram?

Answered by Dr. Yusuf al-Qaradawi | Translated by Sister Marwa The original rule stipulated in shari’a that a woman is not to travel alone.  Rather, she has to be accompanied by her husband or any other mahram of hers.  This rule is supported by narrations of Bukhari and others that Ibn-Abbas (ra) said, that the Prophet (pbuh) said, “A woman should not travel except with a mahram, and no man should visit her except in the presence of a mahram.” Abu-Hurairah related the following on behalf of the Prophet (pbuh), “It is not permissible for a woman who believes in Allah and the Last Day to travel for one day and night except with a mahram.” Abu-Sa’id reported that the Prophet (pbuh) said, “A woman should not travel for two days except she is accompanied by her husband or a mahram.”