সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

মঙ্গল শোভাযাত্রায় কারা যায় এবং কেন যায়?

বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে ছিলাম, তাই ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় অনেক কিছুই দেখতে ও শুনতে হয়েছে। ভালো মুসলিমদের কেউ কখনো মঙ্গল শোভাযাত্রায় যায় না। এটাকে শিরক মনে করে। তাহলে যায় কারা? এবং কেন?

এক।
মঙ্গল শোভাযাত্রায় সবচেয়ে বেশি অংশ গ্রহণ করেন হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষেরা। ঢাকেশ্বরী মন্দির ও জগন্নাথ হলের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ মঙ্গল শোভাযাত্রার নেতৃত্ব দিয়ে থাকেন। মঙ্গল শোভাযাত্রাকে অনেক হিন্দু যেহেতু তাদের একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান মনে করেন, তাই এ নিয়ে আমার কোনো কথা নেই। হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন যত ইচ্ছা তত যেতেই পারেন তাদের মঙ্গল শোভাযাত্রায়।

দুই।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন আবাসিক হলে থাকা ছাত্র-ছাত্রীরা মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশ গ্রহণে দ্বিতীয়। ছাত্র-ছাত্রীরা সবাই নিজ ইচ্ছায় মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশ গ্রহণ করে, ব্যাপারটা এমন না। ক্ষমতাশীল রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রীরা সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদেরকে জোর করে মঙ্গল শোভাযাত্রায় নিয়ে যায়। যারা হলে থেকেছেন, তারা বিষয়টা ভালোভাবে জানেন। নেতা-নেত্রীরা নিজেদেরকে ভগবানের ছেয়েও বড় মনে করে। তাদের ছোট্ট একটা কথাও যদি সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীরা না শুনে তাহলে হাত-পা ভেঙ্গে সোজা পুলিশে ধরিয়ে দেয়া হয়। তাই অনেক সাধারণ ছাত্র-ছাত্রী ভয়ে ও নিরুপায় হয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশ নেয়।

তিন।
কিছু ছাত্র-ছাত্রী নিজের ইচ্ছায় মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশ গ্রহণ করে। কারণ, আমাদের সময়ে যারা মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশ গ্রহণ করত, তাদেরকে হলের প্রভোস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের টাকা থেকে সকালে নাস্তা করার জন্যে ৫০/১০০ টাকা দিত। আমরা যারা নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তান, তাদের কাছে ৫০ বা ১০০ টাকার মূল্য কত, তা বলে বোঝানো যাবে না। হলের ক্যান্টিনে নাস্তা করতে নেতা-নেত্রীদের কোনো টাকা না লাগলেও, আমাদের কিন্তু কমপক্ষে ২০ টাকা লাগত। পয়লা বৈশাখে হলের বাইরে রাস্তায় এসে একটা মিছিল দিয়ে আসলে যদি ৫০/১০০ টাকা পাওয়া যায়, এবং নিজের পকেট থেকে ২০ টাকা খরচ করতে না হয়, তাহলে বুঝেন, ভালোভাবে ইসলাম না জানা ছাত্র-ছাত্রীরা মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশ নিবে না কেন?

চার।
ঢাকার রাস্তায় চোর ও লম্পটদের অভাব নেই। হোলি উৎসব বা পয়লা বৈশাখ জাতীয় অনুষ্ঠানগুলোতে ঢাকার সমস্ত চোর ও লম্পটেরা শাহবাগে এসে একত্রিত হয়। এরা সুযোগ পেলেই পুরুষদের মানিব্যাগ ও মোবাইল নিয়ে যায়, আর নারীদের শরীরের উপর এসে পড়ে। গত বছরগুলোতে অনেক নারীকে বিবস্ত্র করার ঘটনা ঘটেছিল। এ বছরও এমন কিছু ঘটা খুবই স্বাভাবিক।

শাহবাগ এমনিতেই চোরের আড্ডা। আম্মুকে নিয়ে একবার বারডেমে প্রবেশ করতে না করতেই আমার জীবনের প্রথম মোবাইলটা নিয়ে গেছে চোরে। বেশ কয়েক বছর আগে, বঙ্গবন্ধু হাসপাতালে আম্মুর ডাক্তারি পরীক্ষার জন্যে সাত হাজার টাকা জমা দিতে লাইনে দাঁড়াতে না দাঁড়াতেই দেখি মানি ব্যাগ নেই। নিয়ে গেছে চোরে। এরপর, আলা উদ্দিন ভাই ও রাকিব ভাই সহ শাহবাগে চা খাচ্ছি একদিন, একটুপর দেখি পকেটে মোবাইল নেই। পয়লা বৈশাখ যখন আসে, তখন এসব চোর ও লম্পটদের জন্যে একটি মহা উৎসবের দিনে পরিণত হয়।

পাঁচ।
চারুকলার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা তো মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রধান আয়োজক-ই বটে। দুঃখ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার শৈল্পিক কোনো বৈশিষ্ট্য নেই বললেই চলে। তাদের কাছে শিল্প মানে জন্তু-জানোয়ারের মূর্তি; এর বেশি কিছু তারা পারেন না। বিদেশের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখলাম, চারুকলার ছাত্র-ছাত্রীরা কি অসাধারণ শিল্প তৈরি করেন, সারাদিন মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকতে মন চায়। অথচ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার ছাত্র-শিক্ষকরা কিসব ভয়ঙ্কর জন্তু-জানোয়ারের ছবি নিয়ে পড়ে থাকে, যা দেখে সাধারণ মানুষও ভয় পায়। শিল্প হলো ভালোবাসার প্রকাশ, সুন্দরের প্রকাশ। জন্তু-জানোয়ারের ছবি দিয়ে ভয় দেখানোটা একটি সন্ত্রাসী কর্ম হতে পারে, শিল্প হতে পারে না।

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আল্লামা জালাল উদ্দিন রূমির বাণী ও কবিতা

ইউরোপ ও অ্যামেরিকা সহ সারাবিশ্বের অমুসলিমরা যে মানুষটির লেখা সবচেয়ে বেশি পড়েন, তিনি মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমি। তাঁর ৫ টি বই ও একটি উপদেশ বাণী রয়েছে। ১। মসনবী, (৬ খণ্ড, ২৬০০০ কবিতার লাইন) ২। দিওয়ানে কবির, (৪০০০০ কবিতার লাইন) ৩। ফিহি মা ফিহি, (বিভিন্ন সভা ও মসলিসে দেয়া বক্তব্য) ৪। মাজালিশ-ই শব, (সাতটি বড় বক্তৃতা) ৫। মাকতুবাত, (১৪৭ টি চিঠি) আর একটি উপদেশ রয়েছে। উপদেশটি হলো – "অল্প খাও, স্বল্প ঘুমাও, কম কথা বল। গুনাহ থেকে দূরে থাক, সবসময় কাজ কর। সুখের অনুসন্ধানী মানুষদের থেকে দূরে থাক, এসব মানুষ তোমাকে যন্ত্রণা দিয়ে যাবে। সৎ, ভালো ও সুভাষী মানুষের সাথে থাক। ভালো মানুষ তারা, যাদের দ্বারা সাধারণ মানুষ উপকৃত হয়। আর, ভালো কথা হলো তাই, যা সংক্ষিপ্ত ও গুরুত্বপূর্ণ। সকল প্রশংসা এক মাত্র আল্লাহর।" [১৭ ডিসেম্বর রূমির 'শবে আরুস'। শবে আরুস অর্থ দ্বিতীয় জন্মের রাত বা মৃত্যুর রাত]

ওমরের ওয়াজে নারীর বাধা

মানুষের সামনে ওয়াজ করছেন ওমর (রা)। তিনি তখন অর্ধেক পৃথিবীর খলিফা। বিশাল ক্ষমতাবান। কিন্তু, তাঁর বিরোধিতা করে এক বৃদ্ধ দুর্বল নারী দাঁড়িয়ে গেলেন। দুর্বল নারীটি ওমর (রা)-কে বললেন, "হে ওমর, আল্লাহকে ভয় করুন। যেখানে আল্লাহ তায়ালা সূরা নিসার ২০ নং আয়াতে নারীদের জন্যে দেনমোহর সীমিত করে দেননি, সেখানে আপনি দিচ্ছেন কেন?" ওমর (রা) বললেন, "নারীটি ঠিক বলেছে, ওমর ভুল করেছে।" [ইবনে হযর আল-আসকালানি,ফাতুল-বারী, ৯:১৬৭] ভাগ্য ভালো ঐ দুর্বল নারী সাহাবীটির। তিনি অর্ধেক পৃথিবীর খলিফা ওমর (রা)-কে বাধা দিয়েছিলেন। যদি ঐ নারীটি এমন কোনো হুজুরকে বাধা দিতেন, যার সাথে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর যোগাযোগ আছে, তাহলে অবস্থাটা কি হতো দেখুন...

What is The Ruling Regarding a Women Going to Hajj Without a Mahram?

Answered by Dr. Yusuf al-Qaradawi | Translated by Sister Marwa The original rule stipulated in shari’a that a woman is not to travel alone.  Rather, she has to be accompanied by her husband or any other mahram of hers.  This rule is supported by narrations of Bukhari and others that Ibn-Abbas (ra) said, that the Prophet (pbuh) said, “A woman should not travel except with a mahram, and no man should visit her except in the presence of a mahram.” Abu-Hurairah related the following on behalf of the Prophet (pbuh), “It is not permissible for a woman who believes in Allah and the Last Day to travel for one day and night except with a mahram.” Abu-Sa’id reported that the Prophet (pbuh) said, “A woman should not travel for two days except she is accompanied by her husband or a mahram.”