সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

সূরা কাহাফ : একটি রাজনৈতিক শিক্ষা

সূরা কাহাফে চারটি ঘটনার বর্ণনা আছে। এই চারটি ঘটনার সাথে জড়িত আছে চার ধরণের ফিতনা এবং তা থেকে মুক্তি পাবার উপায়।

ঘটনাগুলো হলো –

১) আসহাবে কাহাফ বা গুহাবাসীদের ঘটক্ষা
২) দুই বাগানের মালিক ও তার বন্ধুর ঘটনা,
৩) মুসা (আ) ও খিজির (আ)-এর ঘটনা, এবং
৪) যুলকারনাইন এর ঘটনা,

আর, ফিতনাগুলো হলো –

১) সমাজের ফিতনা, যেখানে ধর্ম ও বিশ্বাস টিকিয়ে রাখা যায় না।
২) সম্পদের ফিতনা, যা দিয়ে মানুষ নিজেকে সর্বাধিকারী মনে করে।
৩) জ্ঞানের ফিতনা, যা দিয়ে মানুষ অহংকার করে। এবং
৪) ক্ষমতার ফিতনা, যা দিয়ে মানুষ অন্যের উপর জুলুম করে।

এবার আসুন, এই চারটি ঘটনার সাথে চারটি ফিতনার সংযুক্তি কি এবং এর থেকে মুক্তির উপায় কি, তা সূরা কাহাফ থেকে বিস্তৃতভাবে দেখে নেয়া যাক।

ঘটনাগুলো শুরু করার ঠিক আগেই আল্লাহ তায়ালা বলেন –

إِنَّا جَعَلْنَا مَا عَلَى الْأَرْضِ زِينَةً لَهَا لِنَبْلُوَهُمْ أَيُّهُمْ أَحْسَنُ عَمَلًا

“পৃথিবীর উপর যা কিছু আছে, আমি সব কিছুকে পৃথিবীর জন্যে শোভা করে দিয়েছি। যাতে আমি তাদেরকে পরীক্ষা করতে পারি, কর্মের দিক থেকে তাদের মধ্যে কে উত্তম ।”
[সূরা কাহাফ, আয়াত – ৭]

সমাজ, সম্পদ, জ্ঞান ও ক্ষমতা – এ চারটি জিনিস আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে আমাদের জন্যে যেমন নেয়ামত, তেমনি পরীক্ষা বা ফিতনাও বটে। তাই এই ঘটনাগুলো বর্ণনা করার পূর্বেই আল্লাহ তায়ালা বলে দিচ্ছেন যে, এগুলো হচ্ছে পৃথিবীর শোভা এবং তোমাদেরকে পরীক্ষা করার উপায়।

এখন খুবই সংক্ষেপে প্রথম ঘটনাটি দেখুন। এটি ছিল আসহাবে কাহাফ বা গুহাবাসীদের ঘটনা।

ঘটনার বর্ণনা শুরু হয়েছে সূরাটির ৯ নং আয়াত থেকে, এবং শেষ হয়েছে ২৬ নং আয়াতে এসে। এরপর ২৮, ২৯, ৩০ এবং ৩১ নং –এ চারটি আয়াতে বর্ণনা করা হয়েছে, কিভাবে সমাজের বিভিন্ন ফিতনা থেকে আমদের নিজেকে রক্ষা করা সম্ভব।

একটি সমাজে কিছু তরুণ আল্লাহ তায়ালার প্রতি বিশ্বাস করত। কিন্তু তারা তাদের সমাজের অন্যায়-জুলুম-নির্যাতন এবং ধর্মহীন মানুষদের দেখে দেখে একেবারেই হতাশ হয়ে গিয়েছিল। ফলে তারা আল্লাহ তায়ালার কাছে দোয়া করল – “হে আমাদের প্রতিপালক! তুমি নিজ হতে আমাদেরকে অনুগ্রহ দান কর। আমাদের জন্যে আমাদের কাজকর্মকে সঠিকভাবে পরিচালনার ব্যবস্থা কর।” [সূত্র : আয়াত – ১০]

আল্লাহ তায়ালা তাদের দোয়া কবুল করলেন এবং তাদেরকে বললেন – “তোমরা গুহায় আশ্রয় গ্রহণ কর এবং তিনি তোমাদের জন্যে তোমাদের কাজকর্মকে ফলপ্রসূ করার ব্যবস্থা করবেন।” [সূত্র : আয়াত – ১৬]

ঘটনাটা এভাবে চলতে থাকে ২৬ নং আয়াত পর্যন্ত।

এই ঘটনাটিকে পৃথিবীর বিভিন্ন আদর্শের মানুষ বিভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করেন। সূফী ঘরনার মানুষেরা একভাবে ব্যাখ্যা করেন, আবার সমাজ পরিবর্তন কর্মীরা অন্যভাবে ব্যাখ্যা করেন। কোন ব্যাখ্যাটা ভুল বা কোনটা সঠিক সে তর্কে না গিয়ে ঘটনাটি আবার লক্ষ্য করি।

এক.
যেসব তরুণদের কথা এখানে বর্ণনা করা হয়েছে, তাদের কেউ নবী বা রাসূল ছিলেন না। তারা সবাই ছিলেন সমাজ পরিবর্তনকারী বা সমাজকর্মী। এ কারণে তারা আল্লাহর কাছে দোয়া করেছেন – “হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের কাজকর্ম সঠিকভাবে পরিচালনার ব্যবস্থা করুন।” [সূত্র : আয়াত – ১০]

দুই.
এখানে কোনো বয়স্ক যুবক, পুরুষ বা বৃদ্ধ ব্যক্তির কথা বলা হয়নি। বরং আয়াতের ভাষ্যমতে বোঝা যায় যে, এরা হলো অবিবাহিত কিছু তরুণ, এবং যাদের বয়স ছিল কম। [সূত্র : আয়াত – ১০]

তিন.
এখানে একক কোনো ব্যক্তির কথা বর্ণনা করা হয়নি। বরং সঙ্ঘবদ্ধ কিছু তরুণের কথা বর্ণনা করা হয়েছে। [সূত্র : আয়াত – ২২]

এবার আসুন, ঘটনাটির আলোকে আমাদের সমাজকে মিলিয়ে নিন।

সাধারণত ধর্মের ব্যাপারে তরুণেরা অনেক বেশি আশাবাদী হয়ে থাকে। তারা সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে সমাজ পরিবর্তন করে দিতে চায়। এটা তরুণের-ই স্বভাব, এবং এটা একটি ভালো কাজ।

কিন্তু সমস্যা দেখা দেয়, যখন দুই ধরণের প্রান্তিক মানুষেরা তরুণদেরকে দু’টি ভিন্ন দিকে প্রভাবিত করতে চায়।

এক পক্ষ তরুণদেরকে নিরাশ করে দিয়ে বলেন – সঙ্ঘবদ্ধতা পরিত্যাগ কর। একা একা চল। পরিবর্তনের নেশা ছেড়ে দাও। শহর ছেড়ে গ্রামে চলে যাও। আসহাবে কাহাফ বা গুহাবাসীদের জীবন ধারণ কর।

অন্য পক্ষ তরুণদের মাঝে আতঙ্ক ছেড়ে দিয়ে বলেন – ধর্মহীন-ঘুণধরা-বেহায়াপনা এই সমাজকে আজ-ই পরিবর্তন করে ফেলতে হবে। প্রয়োজনে বোমা মেরে সবকিছু উড়িয়ে দিয়ে হলেও।

কিন্তু দেখুন, আল্লাহ তায়ালা গুহাবাসীদের ঘটনাটি থেকে আমাদেরকে যে শিক্ষা দিচ্ছেন, তা উপরোক্ত দুটি মতের-ই বিপরীত।

আসহাবে কাহাফের এই ঘটনাটি বর্ণনা করার পরপরেই সূরা কাহাফের ২৭, ২৮, ২৯ এবং ৩০ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা আমাদের পথ দেখাচ্ছেন – কিভাবে সমাজের বিভিন্ন ফিতনা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।

এক.
সমাজের চতুর্দিকে যখন ফিতনার ছড়াছড়ি থাকবে, যখন ঈমান নিয়ে টীকে থাকাই কষ্টকর হয়ে পড়বে, তখন তরুণদের প্রথম কাজ হলো নিয়মিত যত বেশি সম্ভব আল্লাহর কোর’আন অধ্যয়ন করা এবং কোর’আন বুঝতে চেষ্টা করা। কোর’আন-ই তাদেরকে পরবর্তী দিক-নির্দেশনা প্রদান করবে। যেমন আসহাবে কাহফের তরুণেরা গুহায় যাবার জন্যে সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে আল্লাহর কাছে তাদের কর্মপদ্ধতি ও পথ-নির্দেশনা চেয়ে প্রার্থনা করেছিল। [সূত্র : আয়াত – ২৭ এবং ১০]

দুই.
সমাজের বিভিন্ন ফিতনা যেমন একদিনে তৈরি হয় না, তেমনি একদিনেই সবকিছুকে পরিবর্তন করে দেয়া যায় না। যথেষ্ট ধৈর্য সহকারে ও কৌশলে ক্রমান্বয়ে সমাজের ফিতনা সমূহ দূর করার চেষ্টা করতে হয়। এ জন্যেই আল্লাহ তায়ালা ঐ সকল তরুণদেরকে গুহার মধ্যে ৩০৯ বছর ঘুমন্ত রেখে দিয়ে তাদেরকে ধৈর্য শিক্ষা দিয়েছেন। এবং এই ঘটনাটি বর্ণনা শেষ করে আল্লাহ তায়ালা রাসূল (স) এবং আমাদেরকে উদ্দেশ্য করে বলেন – “আপনি ধৈর্য ধারণ করুন।” [সূত্র : আয়াত – ২৮ এবং ২৫]

তিন.
সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে একা একা ধর্ম পালনের কোনো কথা ইসলামে নেই। ধর্মের প্রতিটি কাজ-ই সঙ্ঘবদ্ধভাবে করতে পালন করতে হয়। সালাত, যাকাত, সাওম, হজ্জ – সব কিছুই একেকটি সঙ্ঘবদ্ধ পদ্ধতি। ইসলাম মানুষকে বিচ্ছিন্নভাবে জীবনযাপন করতে নিষেধ করে।

প্রশ্ন হলো, তাহলে আল্লাহ তায়ালা কেন ঐ তরুণদেরকে সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গুহায় গিয়ে জীবনযাপন করতে বললেন? জবাব হলো, আসলে তারা গুহায় গিয়েছিল সঙ্ঘবদ্ধ হবার জন্যে, বিচ্ছিন্ন হবার জন্যে নয়। আসহাবে কাহফের ঐ তরুণেরা সবাই একই সমাজে বসবাস করলেও তারা পরস্পর মিলিত হতে পারত না। সেই সমাজে ধার্মিক তরুণদের সঙ্ঘবদ্ধ হবার কোনো সুযোগ-ই ছিল না। তাই তাই আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে নিরাপদ দূরত্বে বা পাহাড়ের গুহায় গিয়ে সঙ্ঘবদ্ধ হবার পরামর্শ দিয়েছিলেন।

আল্লাহ তায়ালা কেবল যে ঐ তরুণদের সঙ্ঘবদ্ধভাবে চলার পরামর্শ দিয়েছিলেন, এমন না। ঘটনাটি বর্ণনা করা শেষে আমাদের জন্যে শিক্ষামূলক যে আয়াতগুলো বর্ণনা করেছেন, সেখানেও বলা হচ্ছে যে, সমাজের খারাপ মানুষদের থেকে ভালো মানুষেরা বের হয়ে গিয়ে আলাদা সবাই একসাথে সঙ্ঘবদ্ধভাবে জীবনযাপন করবে। আল্লাহ তায়ালা বলছেন –

وَاصْبِرْ نَفْسَكَ مَعَ الَّذِينَ يَدْعُونَ رَبَّهُمْ بِالْغَدَاةِ وَالْعَشِيِّ يُرِيدُونَ وَجْهَهُ ۖ وَلَا تَعْدُ عَيْنَاكَ عَنْهُمْ تُرِيدُ زِينَةَ الْحَيَاةِ الدُّنْيَا ۖ وَلَا تُطِعْ مَنْ أَغْفَلْنَا قَلْبَهُ عَنْ ذِكْرِنَا وَاتَّبَعَ هَوَاهُ وَكَانَ أَمْرُهُ فُرُطًا

তুমি নিজেকে ধৈর্য সহকারে তাদের সংসর্গে আবদ্ধ রাখ যারা সকাল ও সন্ধ্যায় তাদের পালনকর্তাকে তাঁর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে আহবান করে। তুমি পার্থিব জীবনের সৌন্দর্য কামনা করে তাদের থেকে নিজের দৃষ্টি ফিরিয়ে নিও না। যার মনকে আমার স্মরণ থেকে গাফেল করে দিয়েছি, যে নিজের প্রবৃত্তির অনুসরণ করে এবং যার কার্যকলাপ হচ্ছে সীমা অতিক্রম করা, তুমি তার আনুগত্য করবেন না।
[সূরা কাহাফ, আয়াত – ২৮]

সমাজের বিভিন্ন ফিতনা থেকে বাঁচতে হলে ভালো মানুষগুলো সমাজের খারাপ মানুষদের বলয় থেকে বের হয়ে নিজেরা নিজেরা একসাথে সঙ্ঘবদ্ধভাবে জীবনযাপন করতে হয়। এতে পার্থিব জগতের সৌন্দর্য কম থাকলেও প্রশান্ত মনে জীবনযাপন করা সম্ভব হয়ে উঠে।

তাই, সমাজ পরিবর্তন করতে হলে একটি ধর্মহীন সমাজকে ভেঙে দেয়ার চেষ্টা করার চেয়ে আল কোর’আনের সাহায্যে ধৈর্য সহকারে নিজের মত করে একটি ভালো সমাজ গড়ে তোলাই এই ঘটনাটির শিক্ষা।

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আল্লামা জালাল উদ্দিন রূমির বাণী ও কবিতা

ইউরোপ ও অ্যামেরিকা সহ সারাবিশ্বের অমুসলিমরা যে মানুষটির লেখা সবচেয়ে বেশি পড়েন, তিনি মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমি। তাঁর ৫ টি বই ও একটি উপদেশ বাণী রয়েছে। ১। মসনবী, (৬ খণ্ড, ২৬০০০ কবিতার লাইন) ২। দিওয়ানে কবির, (৪০০০০ কবিতার লাইন) ৩। ফিহি মা ফিহি, (বিভিন্ন সভা ও মসলিসে দেয়া বক্তব্য) ৪। মাজালিশ-ই শব, (সাতটি বড় বক্তৃতা) ৫। মাকতুবাত, (১৪৭ টি চিঠি) আর একটি উপদেশ রয়েছে। উপদেশটি হলো – "অল্প খাও, স্বল্প ঘুমাও, কম কথা বল। গুনাহ থেকে দূরে থাক, সবসময় কাজ কর। সুখের অনুসন্ধানী মানুষদের থেকে দূরে থাক, এসব মানুষ তোমাকে যন্ত্রণা দিয়ে যাবে। সৎ, ভালো ও সুভাষী মানুষের সাথে থাক। ভালো মানুষ তারা, যাদের দ্বারা সাধারণ মানুষ উপকৃত হয়। আর, ভালো কথা হলো তাই, যা সংক্ষিপ্ত ও গুরুত্বপূর্ণ। সকল প্রশংসা এক মাত্র আল্লাহর।" [১৭ ডিসেম্বর রূমির 'শবে আরুস'। শবে আরুস অর্থ দ্বিতীয় জন্মের রাত বা মৃত্যুর রাত]

মাথায় রুমাল দেয়া কি মাদানী হুজুর হবার লক্ষণ? নাকি ইহুদি হবার লক্ষণ?

এক তথাকথিত সালাফী মাদানী হুজুর নিজেকে ছাড়া আর সবাইকে ভ্রান্ত মনে করেন। অথচ, নিজেই ইহুদিদের মতো মাথায় রুমাল দিয়ে ওয়াজ করেন। মাথায় রুমাল দেয়ার বিরুদ্ধে যেসব সহীহ হাদিস আছে, তা কি তিনি দেখননি? দলীল – ১ يَتْبَعُ الدَّجَّالَ مِنْ يَهُودِ أَصْبَهَانَ، سَبْعُونَ أَلْفًا عَلَيْهِمُ الطَّيَالِسَةُ দাজ্জালের বাহিনীতে ৭০ হাজার ইহুদী থাকবে, যাদের মাথায় চাদর বা রুমাল থাকবে। সহীহ মুসলিম, মাকতাবায়ে শামেলা, হাদিস নং – ২৯৪৪ দলীল – ২ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَعِيدٍ الخُزَاعِيُّ، حَدَّثَنَا زِيَادُ بْنُ الرَّبِيعِ، عَنْ أَبِي عِمْرَانَ، قَالَ: نَظَرَ أَنَسٌ إِلَى النَّاسِ يَوْمَ الجُمُعَةِ، فَرَأَى طَيَالِسَةً، فَقَالَ: «كَأَنَّهُمُ السَّاعَةَ يَهُودُ خَيْبَرَ» আনাস ইবনু মালিক (রা) জুমার দিনে মসজিদের মধ্যে সমবেত মানুষের দিকে তাকালেন। তিনি অনেকের মাথায় রুমাল দেখতে পান। তখন তিনি বলেন, এরা এখনো ঠিক খাইবারের ইহুদীদের মত। সহীহ বুখারী, মাকতাবায়ে শামেলা, হাদিস নং – ৪২০৮ দলীল – ৩ قال رسول الله – صلى الله عليه وسلم – : ” قال لقمان لابنه وهو يعظه : يا بني إياك والتقنع ، فإنها مخوفة بالليل مذلة بالنهار রাসূল (স) ...

আহলে কোর'আনের কিছু প্রশ্ন ও তার জবাব - ২

মোহাম্মদ Junaid ভাইয়ের কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও তার উত্তর। ১) ইমামদেরকে standard মানতে হবে কেন? - ইমামদেরকে আমরা প্লেটো বা এরিস্টটলের মতো জ্ঞানী, স্কলার ও আলেম মনে করি, standard নয়। ২) ওনাদের status কী? - পৃথিবীর হাজার হাজার স্কলারের মাঝে ইমামরাও অন্তর্ভুক্ত। ৩) ওনাদের কি সুসংবদ্ধ চিন্তা ছিল? - জ্বী, উনাদের কাজ-ই ছিলো চিন্তাকে ফ্রেম দেওয়া। ৪) ওনাদের রচনাসমগ্ৰ কি সুলভ? - দুর্ভাগ্য আমাদের। বাংলা ভাষায় উনাদের বই পুস্তক অনুবাদ হয়নি। কিন্তু, উনাদের প্রচুর বই আছে, যা আমরা জানি না। ৫) প্রামাণিকতা প্রশ্নাতীত? - জী। ৬) বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চা তো প্রবহমান নদীর মতো। পুরা যুগের কারো পায়রবিতে আটকে থাকতে হবে কেন? - নদী যেমন তার উৎসের সাথে ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণ করতে চায় না, তেমনি আমরাও আমাদের অতীতের সকল জ্ঞানের উৎসের সাথে বাঁধ নির্মাণ করতে চায় না। বরং আমাদের জ্ঞানের উৎসে যাবার রাস্তা খোলা রাখতে চাই। ৭) জ্ঞানের পরিমাপক কী? - একজন মানুষ তার সময়ের কতগুলো সমস্যার সমাধান দিতে পেরেছেন, সেটাই তার জ্ঞানের পরিমাপক। ৮) ওনারা কি কিয়ামত দিবসে আমাদের কাজের দায়দায়িত্ব গ্ৰহণ করবেন? - অবশ্যই না। তবে, পৃথিবীকে জানা...