সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

বিজ্ঞান ও মূর্তি পূজা

স্যার আইজ্যাক নিউটন যদি আজ বেঁচে থাকতেন, তাহলে তিনি নিশ্চিত হেফাজতে ইসলামের এই আন্দোলনে যোগদান করতেন।

কারণ, হেফাজতে ইসলাম যেমন মূর্তি ও মূর্তিপূজার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করছে, নিউটনও তাঁর সারাজীবন মূর্তি ও মূর্তিপূজার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছিলেন।

তিনি বলেছিলেন,

"Idolatry is a more dangerous crime because it is apt by the authority of Kings & under very specious pretenses to insinuate itself into mankind."
Source: Isaac Newton, Keynes Ms. 7, King's College, Cambridge, UK

অর্থাৎ, “মূর্তিপূজা হলো সবচেয়ে বিপদজনক একটি অপরাধ। এটি রাজা-বাদশাহ বা প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতাকে পুঁজি করে, মানবজাতির সাথে কটাক্ষ করার জন্যে খুবই সুন্দর একটি ভণ্ডামি”। - স্যার আইজ্যাক নিউটন।

এমন দু’এক লাইন কেবল নয়, মূর্তি ও মূর্তিপূজার বিরুদ্ধে শত-শত পৃষ্ঠা লিখেছিলেন তিনি। প্রশ্ন হলো, নিউটন কেন মূর্তি ও মূর্তিপূজার বিরুদ্ধে এত সোচ্চার ছিলেন?

প্রথমত, মূর্তি তৈরি ও এর দর্শনকে একটা ভণ্ডামি ছাড়া আর কিছুই নয় বলে মনে করতেন নিউটন। যেমন, থেমিস’কে মনে করা হয়, এটি ন্যায় বিচারের প্রতীক। কিন্তু নিউটনের মনে করেন, ন্যায় বিচারের মালিক ও কারণ হলেন একমাত্র আল্লাহ তায়ালা। যেহেতু ন্যায় বিচার কোনো স্থান বা কালের মধ্যে আবদ্ধ নয়, তাই ন্যায় বিচারকে কোনো বস্তু বা মূর্তিতে রূপান্তরিত করা যায় না।

ধরুন, থেমিসের মূর্তি বসানোর আগে কি আদালতে ন্যায় বিচার বলে কিছু ছিল না? অবশ্যই ছিল। আবার, থেমিসের মূর্তি ভেঙে ফেললে কি আদালতে ন্যায় বিচার বন্ধ হয়ে যাবে? অবশ্যই না। তাহলে থেমিসের প্রয়োজন কেন? নিউটনের ভাষায়, এটা হলো জাস্ট একটা ভণ্ডামি।

আল্লাহ তায়ালাও মূর্তি বসানোর এই কাজটিকে ভণ্ডামি ও পথভ্রষ্ট কাজ হিসাবে আখ্যায়িত করেছেন।
وَإِذْ قَالَ إِبْرَاهِيمُ لِأَبِيهِ آزَرَ أَتَتَّخِذُ أَصْنَامًا آلِهَةً إِنِّي أَرَاكَ وَقَوْمَكَ فِي ضَلَالٍ مُّبِينٍ

স্মরণ কর, যখন ইব্রাহীম তাঁর পিতা আযরকে বললেন, ‘তুমি কি মূর্তিসমূহকে উপাস্য মনে কর’? আমি তো দেখতে পাচ্ছি যে, তুমি ও তোমার সম্প্রদায় প্রকাশ্য পথভ্রষ্ট হয়ে আছে। [সূরা ৬/আন’আম – ৭৪]

দ্বিতীয়ত, নিউটন মনে করেন, মূর্তি তৈরি করা হচ্ছে একটি অবৈজ্ঞানিক ও অযৌক্তিক কাজ। মূর্খ-বেকুব মানুষেরাই কেবল মূর্তিকে ন্যায়ের প্রতীক মনে করে। ন্যায় বা অন্যায় বোঝার ক্ষমতা মূর্তির নেই। মূর্তির সামনে পুলিশ যদি নিউটনের মত একজন হেফাজত কর্মীকে বিনা কারণে গুলি করে মেরেও ফেলে, মূর্তি কিছুই বলতে পারবে না; ন্যায় বিচার তো দূরে থাক। এ কারণেই নিউটন মনে করতেন, মূর্তি হলো একটি আদি কুসংস্কার।

শৈল্পিক সৌন্দর্য ও বিজ্ঞানের জ্ঞান যাদের নেই, তারাই কেবল মূর্তিপূজা করে। এবং মূর্তিকে ন্যায়ের প্রতীক মনে করে।

আল্লাহ তায়ালা বলেন –

وَجَاوَزْنَا بِبَنِي إِسْرَائِيلَ الْبَحْرَ فَأَتَوْا عَلَىٰ قَوْمٍ يَعْكُفُونَ عَلَىٰ أَصْنَامٍ لَّهُمْ قَالُوا يَا مُوسَى اجْعَل لَّنَا إِلَٰهًا كَمَا لَهُمْ آلِهَةٌ قَالَ إِنَّكُمْ قَوْمٌ تَجْهَلُونَ

“আমি যখন বনী-ইসরাঈলদিগকে সাগর পার করে দিয়েছি, তখন তারা এমন এক সম্প্রদায়ের কাছে গিয়ে পৌছাল, যারা স্ব-হস্তনির্মিত মূর্তিপূজায় নিয়োজিত ছিল। তারা বলতে লাগল, ‘হে মূসা! আমাদের উপাসনার জন্যও তাদের মূর্তির মতই একটি মূর্তি নির্মাণ করে দিন। তিনি বললেন, ‘তোমারা তো বড়ই মূর্খের দল”। [ সূরা ৭/আ’রাফ – ১৩৮]

তৎকালীন ইহুদীদের মতই মূর্খ বাঙালিদের কেউ কেউ যখন গ্রিকদের দেবী থেমিসকে দেখল, তারা বলতে শুরু করল, ‘আরে ভাই..., পাইছি একটা জিনিস..., নেত্রীরও পছন্দ হইব, আদালতেও ন্যায় ফিরা আইব। চলেন, থেমিস’রে নিয়া আমাগো আদালতের সামনে বসাইয়া দিই।’

মূর্খ বাঙালিদের যেমন চিন্তা, ঠিক তেমন কাজ। কিন্তু, আজ যদি নিউটন বাংলাদেশে থাকতেন, তাহলে হেফাজতে ইসলামের সাথে যোগ দিয়ে মূর্খ বাঙালিদের মূর্তির বিরুদ্ধে অন্তত কয়েক’শ সূত্র আবিষ্কার করে ফেলতেন।

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আল্লামা জালাল উদ্দিন রূমির বাণী ও কবিতা

ইউরোপ ও অ্যামেরিকা সহ সারাবিশ্বের অমুসলিমরা যে মানুষটির লেখা সবচেয়ে বেশি পড়েন, তিনি মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমি। তাঁর ৫ টি বই ও একটি উপদেশ বাণী রয়েছে। ১। মসনবী, (৬ খণ্ড, ২৬০০০ কবিতার লাইন) ২। দিওয়ানে কবির, (৪০০০০ কবিতার লাইন) ৩। ফিহি মা ফিহি, (বিভিন্ন সভা ও মসলিসে দেয়া বক্তব্য) ৪। মাজালিশ-ই শব, (সাতটি বড় বক্তৃতা) ৫। মাকতুবাত, (১৪৭ টি চিঠি) আর একটি উপদেশ রয়েছে। উপদেশটি হলো – "অল্প খাও, স্বল্প ঘুমাও, কম কথা বল। গুনাহ থেকে দূরে থাক, সবসময় কাজ কর। সুখের অনুসন্ধানী মানুষদের থেকে দূরে থাক, এসব মানুষ তোমাকে যন্ত্রণা দিয়ে যাবে। সৎ, ভালো ও সুভাষী মানুষের সাথে থাক। ভালো মানুষ তারা, যাদের দ্বারা সাধারণ মানুষ উপকৃত হয়। আর, ভালো কথা হলো তাই, যা সংক্ষিপ্ত ও গুরুত্বপূর্ণ। সকল প্রশংসা এক মাত্র আল্লাহর।" [১৭ ডিসেম্বর রূমির 'শবে আরুস'। শবে আরুস অর্থ দ্বিতীয় জন্মের রাত বা মৃত্যুর রাত]

মাথায় রুমাল দেয়া কি মাদানী হুজুর হবার লক্ষণ? নাকি ইহুদি হবার লক্ষণ?

এক তথাকথিত সালাফী মাদানী হুজুর নিজেকে ছাড়া আর সবাইকে ভ্রান্ত মনে করেন। অথচ, নিজেই ইহুদিদের মতো মাথায় রুমাল দিয়ে ওয়াজ করেন। মাথায় রুমাল দেয়ার বিরুদ্ধে যেসব সহীহ হাদিস আছে, তা কি তিনি দেখননি? দলীল – ১ يَتْبَعُ الدَّجَّالَ مِنْ يَهُودِ أَصْبَهَانَ، سَبْعُونَ أَلْفًا عَلَيْهِمُ الطَّيَالِسَةُ দাজ্জালের বাহিনীতে ৭০ হাজার ইহুদী থাকবে, যাদের মাথায় চাদর বা রুমাল থাকবে। সহীহ মুসলিম, মাকতাবায়ে শামেলা, হাদিস নং – ২৯৪৪ দলীল – ২ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَعِيدٍ الخُزَاعِيُّ، حَدَّثَنَا زِيَادُ بْنُ الرَّبِيعِ، عَنْ أَبِي عِمْرَانَ، قَالَ: نَظَرَ أَنَسٌ إِلَى النَّاسِ يَوْمَ الجُمُعَةِ، فَرَأَى طَيَالِسَةً، فَقَالَ: «كَأَنَّهُمُ السَّاعَةَ يَهُودُ خَيْبَرَ» আনাস ইবনু মালিক (রা) জুমার দিনে মসজিদের মধ্যে সমবেত মানুষের দিকে তাকালেন। তিনি অনেকের মাথায় রুমাল দেখতে পান। তখন তিনি বলেন, এরা এখনো ঠিক খাইবারের ইহুদীদের মত। সহীহ বুখারী, মাকতাবায়ে শামেলা, হাদিস নং – ৪২০৮ দলীল – ৩ قال رسول الله – صلى الله عليه وسلم – : ” قال لقمان لابنه وهو يعظه : يا بني إياك والتقنع ، فإنها مخوفة بالليل مذلة بالنهار রাসূল (স) ...

আহলে কোর'আনের কিছু প্রশ্ন ও তার জবাব - ২

মোহাম্মদ Junaid ভাইয়ের কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও তার উত্তর। ১) ইমামদেরকে standard মানতে হবে কেন? - ইমামদেরকে আমরা প্লেটো বা এরিস্টটলের মতো জ্ঞানী, স্কলার ও আলেম মনে করি, standard নয়। ২) ওনাদের status কী? - পৃথিবীর হাজার হাজার স্কলারের মাঝে ইমামরাও অন্তর্ভুক্ত। ৩) ওনাদের কি সুসংবদ্ধ চিন্তা ছিল? - জ্বী, উনাদের কাজ-ই ছিলো চিন্তাকে ফ্রেম দেওয়া। ৪) ওনাদের রচনাসমগ্ৰ কি সুলভ? - দুর্ভাগ্য আমাদের। বাংলা ভাষায় উনাদের বই পুস্তক অনুবাদ হয়নি। কিন্তু, উনাদের প্রচুর বই আছে, যা আমরা জানি না। ৫) প্রামাণিকতা প্রশ্নাতীত? - জী। ৬) বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চা তো প্রবহমান নদীর মতো। পুরা যুগের কারো পায়রবিতে আটকে থাকতে হবে কেন? - নদী যেমন তার উৎসের সাথে ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণ করতে চায় না, তেমনি আমরাও আমাদের অতীতের সকল জ্ঞানের উৎসের সাথে বাঁধ নির্মাণ করতে চায় না। বরং আমাদের জ্ঞানের উৎসে যাবার রাস্তা খোলা রাখতে চাই। ৭) জ্ঞানের পরিমাপক কী? - একজন মানুষ তার সময়ের কতগুলো সমস্যার সমাধান দিতে পেরেছেন, সেটাই তার জ্ঞানের পরিমাপক। ৮) ওনারা কি কিয়ামত দিবসে আমাদের কাজের দায়দায়িত্ব গ্ৰহণ করবেন? - অবশ্যই না। তবে, পৃথিবীকে জানা...